টার্গেট ১ কোটি ৪০ লাখ মে. টন চাল

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সারাদেশের মাঠে মাঠে কৃষকরা এখন বড়ই ব্যতিব্যস্ত রোপা আমন আবাদে। পাটের আশানুরূপ ফলনের পর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় রোপা আমনের আবাদ চলছে পুরাদমে। এবার পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় জমিতে রস রয়েছে। তাতে কৃষকদের সুবিধা হয়েছে। দিতে হচ্ছে না সেচ। আবাদ খরচ হচ্ছে তুলনামূলক কম। ধান ও চালের দাম বেশী হওয়ায় কৃষক অতিমাত্রায় ঝুকেছেন ধান আবাদে। কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ গোলাম মারুফ গতকাল দৈনিক বাঙালী কণ্ঠকে জানান, চলতি মৌসুমে সারাদেশে মোট ৫৬ লাখ ৩০হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৫৩ লাখ ৩০হাজার রোপা আমন ও ৩লাখ হেক্টর বোনা আমন। সবমিলিয়ে চাল উৎপাদনের টার্গেট করা হয়েছে ১ কোটি ৪০লাখ মেট্রিক টন। মহাপরিচালক আশাবাদী টার্গেট পুরণ হবে। কারণ কৃষকদের আবাদের উৎসাহ দেখে মনে হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশী জমিতে আবাদ হতে পারে। তাছাড়া এই মৌসুমে রোপা আমনের জন্য সেচ দিতে হচ্ছে না। বর্ষা মৌসুমে অনেক বছর অস্বাভাবিক শুস্কতায় রোপা আমন আবাদে সম্পুরক সেচ দিতে হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, কম আবাদ হলেও এবার আউশের ফলন ভালো হয়েছে। বৃষ্টিনির্ভর আউশ আবাদে খরচ একেবারেই কম। রোপা আমনেও আবাদ খরচ কম হবে। কৃষকরা আশা করছেন, বর্তমানে ধান ও চালের দামও বেশী। তাই আর্থিকভাবে লাভবান হবেন তারা। এসব কারণে কোমর বেধে মাঠে নেমেছেন কৃষকরা আমন আবাদে। মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা বলেছেন, মাঠের অবস্থা খুবই ভালো। মাটিতে পর্যাপ্ত রস আছে। ইতোমধ্যে শতকরা ৫০ভাগেরও বেশী জমিতে আবাদ সম্পন্ন হয়েছে। আগাম আবাদের রোপা আমন ধানের মাঠ ভরে গেছে। মাঠে মাঠে সবুজ ধানের ছোট চারা বাতাসে হেলছে দুলছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়া বোরো ধানের মতোই বাম্পার ফলন হবে রোপা আমনের। যশোরের বারীনগর এলাকার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কৃষক লিয়াকত আলীসহ বেশ কয়েকজন কৃষক জানান, বেশীরভাগ বছরই আমাদের সেচের মাধ্যমে রোপা আবাদ করতে হয়। এবার নদ-নদী, খাল-বিলে পর্য়াপ্ত পানি। আবাদী জমিতে রোপা আমন আবাদের যথেষ্ট উপযোগী ও রস থাকার কারণে বেশী বেশী জমিতে আবাদ হয়েছে। আল্লাহর রহমতে খুবই ভালো হবে এবার রোপা আমন ধান।
কৃষকদের কথা, ‘আমরা তো ধান পাট ও অন্যান্য ফসল আবাদ করি। কোনরূপ ফাকির সুযোগ নেই। কিন্তু ফসল উৎপাদনের পর মূল্য নিয়ে বেশীরভাগই দুশ্চিন্তা করতে হয়। এবার পাটের ফলনে আমরা খুশী। কিন্তু বাজারে উঠানোর পর হাসিন হয়ে যাচ্ছে। দারুণ হতাশ রয়েছেন পাটচাষিরা। উপযুক্ত মূল্য চাষিরা পাচ্ছেন না। দেশের বিভিন্নস্থানে পাটের মূল্য সর্বনিপ্রতিমণ ৩হাজার টাকা নির্ধারণের দাবিতে মিছিল, সিটিং ও স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। শুধু পাট নয়, সব কৃষি পণ্য বাজারে উঠলেই মুনাফালোভী আড়তদার পাইকারদের অপ্রতিরোধ্য দাপট থাকে বরাবরই। এর কারণে আমরা কষ্টার্জিত ফসলের উপযুক্ত মূল্য পাই না। কষ্ট করি আমরা আর ফল খায় সিন্ডিকেট’। মোঃ আলম নামের এক কৃষক ক্ষোভ করে বললেন, ‘আপনারা সাংবাদিক কৃষিসহ সবকিছু নিয়ে লেখালেখি করেন। কৃষিপণ্যের বাজার নিয়ে বেশী বেশী লেখালেখি করেন। কৃষকরা উপযুক্ত মূল্য পেলে স্বাচ্ছন্দ্যে চাষাবাদ করতে পারবে। লাভবান হবেন কৃষকরা। কৃষকদের সবসময় এক ফসলের মূল্য দিয়ে পরবর্তী আবাদ করতে হয়।

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর